এসআই সুকান্তকে মারধর করে পুলিশের কাছে সোপার্দ করার পর ছেড়ে দেওয়ার প্রতিবাদে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. জুলফিকার আলী হায়দারের পদত্যাগের দাবিতে কেএমপি ঘেরাও করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন ছাত্র-জনতা।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) বিকেল ৪টা থেকে খানজাহান আলী সড়কে কেএমপির সামনে এই অবস্থান কর্মসূচি শুরু হয়। এ সময় ছাত্র-জনতা কেএমপির সামনের সড়কে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন।
কেএমপির সামনে আন্দোলনকারীদের অবস্থানের কারণে রাস্তার দুইপাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। ফলে যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
আন্দোলনকারীরা জানান, এসআই সুকান্ত জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর নির্যাতন চালিয়েছেন। তাকে জনতা আটক করে পুলিশে সোপার্দ করে। অথচ তার নামে একাধিক মামলা থাকার পরও পুলিশ তাকে ছেড়ে দিয়েছে। এ জন্য আমরা কেএমপি কমিশনারের পদত্যাগ চাই। পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।
এদিকে পুলিশের এস আই সুকান্ত দাশকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন কেএমপি কমিশনার জুলফিকার আলী হায়দার। তিনি বলেন, সদর থানায় দায়ের হওয়া শফিকুল আলম মনার বাড়ি ভাঙচুর মামলার তাকে গ্ৰেপ্তার করা হয়েছে। একজন সরকারি কর্মচারী গ্রেপ্তার-সংক্রান্ত বিধি-বিধান অনুসরণ করতে সময় লেগেছে। তাকে আদালতে চালানের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা চলমান রয়েছে।
এর আগে, পুলিশ সদর দপ্তর, খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি) এবং চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের একটি যৌথ দল চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে। তাকে খুলনায় আনা হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে খুলনা সদর থানায় একটি এবং আদালতে একটি মামলা রয়েছে।
জানা গেছে, গত মঙ্গলবার বিকেলে নগরীর ইস্টার্ন গেট এলাকা থেকে এসআই সুকান্ত দাসকে মারধর করে খানজাহান আলী থানা পুলিশের কাছে তুলে দেন স্থানীয় বাসিন্দারা। রাতেই তাকে ছেড়ে দেয় খানজাহান আলী থানা পুলিশ। এসআই সুকান্তের বিরুদ্ধে জুলাই অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার ওপর নিপীড়ন ও গণগ্রেপ্তার চালানোর অভিযোগ ছিল। অভ্যুত্থানের পর তার বিরুদ্ধে আদালতে একাধিক মামলা হয়।
পুলিশের কাছে হস্তান্তরের পরও এসআই সুকান্ত দাশকে ছেড়ে দেওয়ার প্রতিবাদে বুধবার দুপুর থেকে কেএমপি সদর দপ্তর ঘেরাও করে বিক্ষোভ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। এক পর্যায়ে তারা কেএমপি সদর দপ্তরের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন। রাত সাড়ে ৯টায় ছাত্ররা চলে গেলে তালা ভেঙে কার্যালয় থেকে বের হন পুলিশ কর্মকর্তারা। তবে বুধবার বিকেলে ফের কেএমপি ঘেরাও করে পুলিশ কমিশনারের পদত্যাগের দাবি জানান আন্দোলনকারীরা।